কতিপয় যুবক ও পরিবেশ প্রেমীর সহযোগে উদ্ধার হলো অসুস্থ বানর
নিজস্ব সংবাদদাতা, ঘাটাল: দাসপুর ২ নম্বর ব্লকের ভগবান চক এলাকা থেকে উদ্ধার হলো এক গর্ভবতী অসুস্থ বানর। বুধবার গ্রামের লোকের চিৎকার শুনে স্থানীয় বাসিন্দা অরিজিৎ সাউ এগিয়ে এসে দেখেন একটি গর্ভবতী বানর নড়তে চড়তে পারছে না। তৎক্ষণাৎ স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সুরাহা করতে পারেন নি। কিছুটা অসহায় হয়ে পড়েন উনি। সেই সাথে নিজ চেষ্টায় কিছু করা যাবে না ভেবে মানসিক দিক থেকে ভেঙে পড়েন। কিন্তু চোখের সামনে এভাবে একটি গর্ভবতী বানর মারা যাক এটাও চান নি পরিবেশপ্রমী অরিজিৎ সাউ। উনি কিছু মানুষের সাথে যোগাযোগ শুরু করেন,বানর কে খাওয়ানোর নানান চেষ্টা করেন। কিন্তু সারাদিন ধরে কিছু কুল কিনারা না পেয়ে পুনরায় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও বিফল হন।
বহু মানুষ জড়ো হয় চেষ্টা করেও রাতে কিছুই করা না গেলে পরের দিন বৃহস্পতিবার যোগাযোগ করেন গোমক পাতা স্কুলের শিক্ষক সুব্রত বুড়াই এর সঙ্গে। উনি সাথে সাথে মেদিনীপুরবাসী শিক্ষক, পরিবেশপ্রেমী মনিকাঞ্চন রায় বাবুর কাছে জানতে চান কিছু উপায় করা যাবে কি না। মণিকাঞ্চনবাবু মেদিনীপুর রেঞ্জার পাপন মহান্ত বাবুর সাথে যোগাযোগ করেন এবং ঘাটালের রেঞ্জারের সাথে কথা বলে জানতে পারেন অসুস্থ বানরটি কে উদ্ধার করতে সমস্যা হতে পারে। কিছুক্ষন পর মনিকাঞ্চন বাবু পুনরায় আশ্বস্থ করেন রেঞ্জারকে, বানরটিকে ধরো সবরকম সহযোগিতা করবে গ্রামবাসী। আশ্বাস পেয়ে তৎক্ষণাৎ অসুস্থ বানরটি কে উদ্ধার করতে বেরিয়ে যান ওখানকার ফরেস্ট রেঞ্জের টিম। উনারা বেশ কষ্টের সাথে বানরটি ধরে খাঁচা বন্দি করে নিয়ে আসেন। ওনাদের কথায় বানরটিকে সেবা করে নিদিষ্ট জায়গায় রাখার ব্যাবস্থা করা হবে। মেদিনীপুর ফরেস্ট রেঞ্জ এর আধিকারিক পাপন মহান্ত বলেন এরকম উদ্যোগ সত্যি প্রশংশার যোগ্য। পরিবেশপ্রেমী শিক্ষক মনিকাঞ্চন বাবু বলেন আমরা সাধারণত এরকম অসহায় পশুকে আরো বেশি বিরক্ত করি ঢিল ছোড়াছুরি করে বিরক্ত করে উত্তক্ত করি।তরফলে ওরা অসহায় হয়ে আমাদের আঘাত করে। কিন্তু অরিজিৎ এর মতো যুবকরা যেভাবে সাবধানতা অবলম্বন করে বানরটিকে নজর রেখে তাকে বনদপ্তরের হাতে তুলে দিলো সত্যি প্রশংসার যোগ্য। সুব্রত বুড়াই স্যার বলেন এরকম উদীয়মান যুবক সমাজে প্রয়োজন, তাহলেই পরিবেশ রক্ষা পাবে, বন্যপ্রাণী টিকে থাকবে। এই যুবকদের দল সহ গ্রামবাসীদের স্যালুট জানান তিনি।